এই দুর্দিনে শান্তির জন্য হজরত মহম্মদের(স:) আদর্শের অনুশীলন নিবিড়ভাবে হোক
মহম্মদ ঘোরী শাহ্
এখন পৃথিবীর মানচিত্রের দিকে তাকালে যে বিষয়টি সবচেয়ে বেশি লক্ষ্য পড়বে তাহল ‘অশান্তি'।এশিয়া, আফ্রিকা, আমেরিকা সর্বত্রই অশান্তির লেলিহান অগ্নিশিখা মানবতাকে দগ্ধ করেই চলছে।দুর্বলের জীবন-মৃত্যু যন্ত্রনা অনুভবের আত্মক্রণ্দনে আকাশ বাতাস ভরে গেছে।সামাজের প্রতিক্ষেত্রে অর্থাৎ নাগরিক, আর্থিক, ন্যায়বিচার ও বিকাশের ক্ষেত্রে বৈষম্যহীন পরিকাঠামোর সুবন্দোবস্ত না করতে পারলে পৃথিবী যে অশান্তির অগ্নিময় গোলাতে পরিনত হবে এটা বলাই বাহুল্য।বিশ্বের সাধারণ মানুষ প্রত্যেকেই চায় আজকের দিনটা শান্তিতেই অতিবাহিত হোক,আগত ঊষাটা আসুক শান্তির বর্ণময় ছটা নিয়ে।তবুও কতিপয় ক্ষমতাবান মানুষের কুটিল চক্রান্তের অঙ্গুলি হেলনে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত হয়ে যাচ্ছে আশান্তির অগ্নিগর্ভ।
অথচ আজ থেকে চৌদ্দ শ' বছর আগে মানবজাতির জন্য অমোঘ শান্তির বার্তা নিয়ে এই পৃথিবীতে পদার্পণ করেছিলেন এক মহাপুরুষ যিনি কেবল শান্তির বার্তা দিয়েই ক্ষান্ত ছিলেন এমন নয়,আশান্ত আরব ভূমিতে শান্তি প্রতিষ্ঠিত করে দেখিয়ে দিয়েও ছিলেন,তিনি হলেন নবী হজরত মহম্মদ (স:)।ন্যায়বিচার, সামাজিক সাম্য,শাসক-শাসিতের সুসম্পর্ক, আর্থিক সমবন্টন ও রাজাদর্শ প্রভৃতির সুবিকাশ তাঁর কর্মজীবনের প্রতিটি ক্ষণ তারই শাক্ষ্য বহন করে।
আজ বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার দায়ীত্ব যাঁদের হাতে ন্যস্ত,তাদের হলেন রাষ্ট্রনায়ক।গনতান্ত্রিক, প্রজাতান্ত্রিক অথবা রাজতান্ত্রিক যে কোন ধরণের রাষ্ট্র হোক না কেন, শান্তি ও সমৃদ্ধি প্রতিষ্ঠার জন্য হজরত মহম্মদের(স:) জীবনাদর্শ ও উপদেশ অনুশীলনই যথেষ্ঠ।তাঁর জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপ ও বানীই অনাবিল শান্তির প্রজ্ঞাসমন্বিত ও প্রতিশ্রুতিময়।
বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্টাই তিনি যে কতটা সার্থক তা বিভিন্ন বিদগ্ধ অমুসলিম পণ্ডিতগনের অভিমতেই সুস্পষ্ট।স্যার জর্জ বার্নাড শ, তাঁর প্রণীত গ্রন্থে ‘THE GENUINE ISLAM’ বলেছেন,“I have studied him(Prophet Muhammad:PBUH)–the wonderful man and in my opinion far from being an antichrist – he must be called the savior of humanity. I believe that if a man like him were to assume the dictatorship of modern world,he would succeed in solving its problems in a way that would bring it the much needed peace and happiness”.। আমরা যদি হজরত মহম্মদের(স:) শুভাগমনের সময়কালে আরবের মানুষদের রাজনৈতিক জীবন পর্যালোচনা করি, তবে সেখানে শান্তির ছিটেফোঁটারও অস্তিত্ব পাবনা।ক্ষমতার হুংকার, খুন,লুটপাট,ব্যাভিচার প্রভৃতি সামাজকে নারকীয় করে তুলেছিল।গোষ্টী নায়কদের দ্বন্দ্বে সাধারণ মানুষজন একমহুর্তও স্বস্তির নি:স্বাস ফেলতে পারত না।এমতো পরিস্থিতিতে হজরত মহম্মদ(সঃ) ৬২২ খ্রীস্টাব্দের ২৪ সেপ্টম্বর মদিনার মাটিতে পা রাখেন,বহু গোষ্ঠী অধ্যুষিত মদিনার মানুষজন সেই সময় রণক্লান্ত ও কলহক্লিষ্ট ছিল।তারা এই মহামানবকে সাগ্রহে অনুরোধ করল মদিনায় শান্তি ও সুশাসন প্রতিষ্টা করতে। এলক্ষ্যে মহানবী(সঃ) মদিনার শাসনকার্য পরিচালনার জন্য নিয়ম বিধিবদ্ধ করলেন যেটি মদিনার সনদ নামে পরিচিত,যা রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য প্রথম লিখিত সংবিধান। ৪৭টি ধারা সম্বলিত এই সনদে বিভিন্ন গোষ্টী, সম্প্রদায় ও ধর্মের মানুষদের নাগরিক অধিকার যাতে সাম্যের ভিত্তিতে সংরক্ষিত থাকে মহানবী(স:) এটিকে ধর্ম নিরপেক্ষ ভাবে প্রনয়ন করেন।যা আজও আধুনিক রাষ্ট্র বিজ্ঞানীদের নিকট বড়ই বিশ্ময়ের।প্রথম দশ ধারায় ন্যায়বিচার পদ্ধিতির আইন, এগার থেকে কুড়ি ধারায় মুসলিমদের মধ্যে সুসম্পর্ক ও নাগরিক অধিকারের আইন,একুশ থেকে ছাব্বিশ ধারায় ধর্মীয় স্বাধানতা, আন্তরাষ্ট্রীয় বিরোধ মীমাংসা সম্পর্কিত আইন,সাতাশ থেকে ছত্রিশ ধারায় যুদ্ধ নীতি, সামাজিক সুসম্পর্ক, নাগরিক ক্ষতিপূরণ,নারী অধিকারের আইন লিপিবদ্ধ হয়েছে।এই সনদ যে পরবর্তী কালের ভিন্ন ভিন্ন গোষ্টী সমবায়ের আধুনিক রাষ্ট্রের রূপরেখা এবং শান্তি প্রতিষ্ঠাই সক্ষম তা নিশ্চিত।এবং এই সময় মদিনা একটি মানবজাতির অনুকরণ যোগ্য রাষ্ট্রতে পরিনত হল তা বলাই বাহুল্য।এপ্রসঙ্গে ঐতিহাসিক পি কে হিট্টি'র এই মন্তব্যটি প্রাণিধান যোগ্য,“Out of the religious community of all Madinah the later and largest state of Islam arose”.
আজ আমরা দেখছি পৃথিবীর প্রত্যেকটি প্রান্তে সংখ্যা লঘুত্বের জন্য কিছু মানুষের উপর নিদারুণ নিপীড়ন নেমে এসেছে।সেই সব রাষ্ট্রের রাষ্ট্রনায়কগন ক্ষমতারক্ষার মোহে সংখ্যাগুরু জনগনকে সন্তুষ্ট করতে নির্দ্বিধায় রাজাদর্শ হতে বিচ্যুতহয়ে সার্বজনীন শান্তিকে কূটিলতার সিন্দুকে আবদ্ধ করে ফেলছেন। অথচ আজ থেকে চৌদ্দ শ বছর পূর্বে মহামানব হজরত মহম্মদ(স:)মানবজাতির জন্য শান্তিময় রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রনয়ণ করে দিয়েগেছেন।আর যদি আমরা সংকীর্ণবোধে তার অনুশীলন না করি, অশান্তির দাবানলে দগ্ধ হওয়া ছাড়া আর উপায় আছে কি?
অথচ আজ থেকে চৌদ্দ শ' বছর আগে মানবজাতির জন্য অমোঘ শান্তির বার্তা নিয়ে এই পৃথিবীতে পদার্পণ করেছিলেন এক মহাপুরুষ যিনি কেবল শান্তির বার্তা দিয়েই ক্ষান্ত ছিলেন এমন নয়,আশান্ত আরব ভূমিতে শান্তি প্রতিষ্ঠিত করে দেখিয়ে দিয়েও ছিলেন,তিনি হলেন নবী হজরত মহম্মদ (স:)।ন্যায়বিচার, সামাজিক সাম্য,শাসক-শাসিতের সুসম্পর্ক, আর্থিক সমবন্টন ও রাজাদর্শ প্রভৃতির সুবিকাশ তাঁর কর্মজীবনের প্রতিটি ক্ষণ তারই শাক্ষ্য বহন করে।
আজ বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার দায়ীত্ব যাঁদের হাতে ন্যস্ত,তাদের হলেন রাষ্ট্রনায়ক।গনতান্ত্রিক, প্রজাতান্ত্রিক অথবা রাজতান্ত্রিক যে কোন ধরণের রাষ্ট্র হোক না কেন, শান্তি ও সমৃদ্ধি প্রতিষ্ঠার জন্য হজরত মহম্মদের(স:) জীবনাদর্শ ও উপদেশ অনুশীলনই যথেষ্ঠ।তাঁর জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপ ও বানীই অনাবিল শান্তির প্রজ্ঞাসমন্বিত ও প্রতিশ্রুতিময়।
বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্টাই তিনি যে কতটা সার্থক তা বিভিন্ন বিদগ্ধ অমুসলিম পণ্ডিতগনের অভিমতেই সুস্পষ্ট।স্যার জর্জ বার্নাড শ, তাঁর প্রণীত গ্রন্থে ‘THE GENUINE ISLAM’ বলেছেন,“I have studied him(Prophet Muhammad:PBUH)–the wonderful man and in my opinion far from being an antichrist – he must be called the savior of humanity. I believe that if a man like him were to assume the dictatorship of modern world,he would succeed in solving its problems in a way that would bring it the much needed peace and happiness”.। আমরা যদি হজরত মহম্মদের(স:) শুভাগমনের সময়কালে আরবের মানুষদের রাজনৈতিক জীবন পর্যালোচনা করি, তবে সেখানে শান্তির ছিটেফোঁটারও অস্তিত্ব পাবনা।ক্ষমতার হুংকার, খুন,লুটপাট,ব্যাভিচার প্রভৃতি সামাজকে নারকীয় করে তুলেছিল।গোষ্টী নায়কদের দ্বন্দ্বে সাধারণ মানুষজন একমহুর্তও স্বস্তির নি:স্বাস ফেলতে পারত না।এমতো পরিস্থিতিতে হজরত মহম্মদ(সঃ) ৬২২ খ্রীস্টাব্দের ২৪ সেপ্টম্বর মদিনার মাটিতে পা রাখেন,বহু গোষ্ঠী অধ্যুষিত মদিনার মানুষজন সেই সময় রণক্লান্ত ও কলহক্লিষ্ট ছিল।তারা এই মহামানবকে সাগ্রহে অনুরোধ করল মদিনায় শান্তি ও সুশাসন প্রতিষ্টা করতে। এলক্ষ্যে মহানবী(সঃ) মদিনার শাসনকার্য পরিচালনার জন্য নিয়ম বিধিবদ্ধ করলেন যেটি মদিনার সনদ নামে পরিচিত,যা রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য প্রথম লিখিত সংবিধান। ৪৭টি ধারা সম্বলিত এই সনদে বিভিন্ন গোষ্টী, সম্প্রদায় ও ধর্মের মানুষদের নাগরিক অধিকার যাতে সাম্যের ভিত্তিতে সংরক্ষিত থাকে মহানবী(স:) এটিকে ধর্ম নিরপেক্ষ ভাবে প্রনয়ন করেন।যা আজও আধুনিক রাষ্ট্র বিজ্ঞানীদের নিকট বড়ই বিশ্ময়ের।প্রথম দশ ধারায় ন্যায়বিচার পদ্ধিতির আইন, এগার থেকে কুড়ি ধারায় মুসলিমদের মধ্যে সুসম্পর্ক ও নাগরিক অধিকারের আইন,একুশ থেকে ছাব্বিশ ধারায় ধর্মীয় স্বাধানতা, আন্তরাষ্ট্রীয় বিরোধ মীমাংসা সম্পর্কিত আইন,সাতাশ থেকে ছত্রিশ ধারায় যুদ্ধ নীতি, সামাজিক সুসম্পর্ক, নাগরিক ক্ষতিপূরণ,নারী অধিকারের আইন লিপিবদ্ধ হয়েছে।এই সনদ যে পরবর্তী কালের ভিন্ন ভিন্ন গোষ্টী সমবায়ের আধুনিক রাষ্ট্রের রূপরেখা এবং শান্তি প্রতিষ্ঠাই সক্ষম তা নিশ্চিত।এবং এই সময় মদিনা একটি মানবজাতির অনুকরণ যোগ্য রাষ্ট্রতে পরিনত হল তা বলাই বাহুল্য।এপ্রসঙ্গে ঐতিহাসিক পি কে হিট্টি'র এই মন্তব্যটি প্রাণিধান যোগ্য,“Out of the religious community of all Madinah the later and largest state of Islam arose”.
আজ আমরা দেখছি পৃথিবীর প্রত্যেকটি প্রান্তে সংখ্যা লঘুত্বের জন্য কিছু মানুষের উপর নিদারুণ নিপীড়ন নেমে এসেছে।সেই সব রাষ্ট্রের রাষ্ট্রনায়কগন ক্ষমতারক্ষার মোহে সংখ্যাগুরু জনগনকে সন্তুষ্ট করতে নির্দ্বিধায় রাজাদর্শ হতে বিচ্যুতহয়ে সার্বজনীন শান্তিকে কূটিলতার সিন্দুকে আবদ্ধ করে ফেলছেন। অথচ আজ থেকে চৌদ্দ শ বছর পূর্বে মহামানব হজরত মহম্মদ(স:)মানবজাতির জন্য শান্তিময় রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রনয়ণ করে দিয়েগেছেন।আর যদি আমরা সংকীর্ণবোধে তার অনুশীলন না করি, অশান্তির দাবানলে দগ্ধ হওয়া ছাড়া আর উপায় আছে কি?
Comments